গোসল কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি সংজ্ঞাসহ বিস্তারিত
গোসল কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি সংজ্ঞাসহ
আজ আমরা জানবো গোসল কালে বলে, কত প্রকার এবং কি কি। আরও জানবো কখন ফরজ গোসল করতে হয়। কখন ওয়াজিব গোসল করতে হয়। গোসলের আগে কি নিয়ত করে গোসল করতে হয় সেইটাও আমরা জানবো। এক কথায় এই পোস্টে আমরা গোসল সম্পর্কে বিস্তারির বর্ননা জানবো। যেন দ্বিতীয় আর কোন পোস্ট দেখার প্রয়োজন না হয়। তাই ধৈর্য ধরে পুরোটা পুরার অনুরোধ রইলো-
![গোসল কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি সংজ্ঞাসহ বিস্তারিত গোসল কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি সংজ্ঞাসহ বিস্তারিত](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhX-llAFkCkn_Pwga8E1YLjZkChrx8yUNQkkPdFtIwo4K7uQ0APbV9aPTLp1YIKaxlLr5H2It9ZMPxcS-XJPJignA-2aa8BMXc366lQg0_xdkAVc0n8AEaQZeLBTdC7xNMjatznD_Vv3-ShCjxzQNLT9aHCT6fkughnp65hiE0JxFwbeNVyFGafkXTXBg8/s16000-rw/%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A6%B2%20%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87%20%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%87%20%E0%A6%95%E0%A6%A4%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%93%20%E0%A6%95%E0%A6%BF%20%E0%A6%95%E0%A6%BF%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%B9%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A4.webp)
গোসল কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি?
মাথা হতে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত উত্তমরূপে পানি দ্বারা ধৌত করাকে ইসলামী শরী'য়তের পরিভাষায় "গোসল" বলে।
গোসল সাধারণত চার প্রকার। যথাঃ
১. ফরজ গোসল,২. ওয়াজিব গোসল,৩. সুন্নত গোসল,৪. মুস্তাহাব গোসল।
গোসল করার পূর্বে কি নিয়্যত করতে হয়?
নির্জন স্থানে কিংবা গোসলখানায় যেখানে লোকজন না থাকে এমন উপযুক্ত স্থানে গিয়ে প্রথমে গোসলের নিয়্যত করতে হয়।
-نويت الغسل لرفع الجنابت
বাংলা উচ্চারনঃ নাওয়াইতুল গোসলা লিরাফ'য়িল জানাবাতি।
গোসলের নিয়্যতের অর্থঃ নাপাকীসমূহ দূর করার জন্য আমি গোসল করার মনস্থ করলাম।
গোসলের আগে কি কি করা ফরজ?
গোসল সম্পাদন করার জন্য তিনটি কাজ করা ফরজ। যথাঃ
১. গরগরাসহ তিনবার কুলি করা।২. নাকের উভয় ছিদ্রে পানি প্রবেশ করিয়ে বামহাতের কনিষ্ঠ ও বৃদ্ধাঙ্গুলির মাথা দ্বারা ভালভাবে নাক সাফ করা।৩. সমস্ত শরীর পানি দ্বারা খুব ভালভাবে ধৌত করা যাতে একটা পশম পরিমান জায়গাও শুকনা না থাক, সেদিকে বিশষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
গোসলের আগে কি কি করা সুন্নত?
গোসল সম্পাদন করার জন্য চারটি কাজ করা সুন্নত। যেমন-
১. প্রথমে বিসমিল্লাহ্ দোয়া পড়া।২. উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা।৩. শরীরের যেসব স্থানে নাপাকী আছে সেগুলো উত্তমরূপে ধৌত করা।৪. গোসলের পর ওযূ করা। গোসলের স্থান হতে একটু দূরে সরে পা ধৌত করে নেবে। এরপর বামদিকে তিনবার এবং ডানদিকে তিনবার, অতঃপর মাথার উপর তিনবার পানি দিয়ে ধৌত করা।
গোসলের আগে কি কি করা মুস্তাহাব?
গোসল সমাধা করার জন্য ফরয, সুন্নত কাজ ছাড়াও নিম্নলিখিত কাজসমূহ আদায় করা মুস্তাহাব।
- গোসলের নিয়্যত করা,
- বিসমিল্লাহ্ পড়ে হাত ধৌত করা,
- গোসল করার সময় কা'বামুখী হওয়া,
- সমস্ত শরীর উত্তমরূপে ঘষে-মেজে নেয়া,
- লজ্জাস্থান ভালোভাবে ঘষে-মেজে নেয়া,
- গোসল করার সময় কথা না বলা,
- প্রয়োজনের চেয়ে কম বা বেশি পানি খরচ না করা,
- গোসল শেষে ভালো পরিষ্কার মোটা কাপড় দ্বারা শরীরের পানি মুছে নেয়া।
কি করলে বা কখন গোসল ফরজ হয়?
"ফরজ" মানে আল্লাহ্র আদেশ বলা হয়েছে। তাই ফরজ গোসল মানে গোসল করতেই হবে আর না হলে আপনি আল্লাহ্র আদেশ অমান্য করলেন আর নাপাকও থেকে যাবেন। আর নাপাক থাকলে নামায, রোজা, আমল কোন কিছুই হবে না। আপনি যতই অজু করেন বা জামা-কাপড় বদলান তবুও আপনি নাপাক থেকে যাবেন। আর তাই ফরজ গোসল অবশ্যই করতে হবে।
যেসব কারণে গোসল ফরজ হয় তা নিচে দেওয়া হলঃ
- কামভাবের উত্তেজনার সাথে কিনবা কোন অবস্থায় বীর্যপাত হলে।
- মহিলাদের ঋতুস্রাব সমাপ্ত হয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হলে।
- প্রসাবের পর নিফাসের রক্ত পড়া বন্ধ হলে।
- সঙ্গম করার সময় লিঙ্গের অগ্রভাগ যোনিপথে প্রবেশ করলে এরূপ অবস্থায় বীর্যপাত না হলেও গোসল ফরজ হবে।
কি করলে বা কখন গোসল ওয়াজিব হয়?
"ওয়াজিব" মানে আমাদের রাসূল (সাঃ) এর নির্দেশ বলা হয়েছে। তাই ওয়াজিব গোসল করাটাও জরুরী।কখন গোসল ওয়াজিব হয় তা নিচে দেওয়া হলঃ
- মৃত ব্যক্তিকে কাফন-দাফনের জন্য গোসল দেওয়া।
- নাপাকী অবস্থায় কাফির বা মুশরিক লোক পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে।
- বালেগ হবার পর কন ছেলে বা মেয়ের সপ্নদোষ হলে।
- শ্রীরের অধিকাংশ স্থানে নাপাকী লেগে থাকলে।
কোন গোসলকে সুন্নত গোসল বলা হয়?
নিচের দেওয়া কারণে গোসল করা সুন্নত। যথাঃ
- শুক্রবার দিন জুমু'আর নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে গোসল করা।
- দু'ঈদের নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে গোসল করা।
- আরাফাতের ময়দানে উপস্থির হওয়ার উদ্দেশ্যে গোসল করা।
- হজ্জ বা ওমরাহ্ আদায়ের উদ্দেশ্যে গোসল করে ইহরাম বাঁধা।
- কাফির ব্যক্তি মুসলমান হয়ে মনের সন্দেহ দূর করার উদ্দেশ্যে গোসল করা।
কোন গোসলকে মুস্তাহাব গোসল বলা হয়?
নিচের দেওয়া কারণে গোসল করা মুস্তাহাব । যথাঃ
- বেহুশ হওয়ার পর হুঁশ এলে গোসল করা।
- সিঙ্গা দিয়ে রক্ত বের করার পর গোসল করা।
- শবে বরাতের নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় গোসল করা।
- আরাফার পূর্বরাত্রিতে গোসল করা।
- শবে কদরের নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় গোসল করা।
- মক্কা শরীফের নিকটবর্তী মুযদালিফা নামক স্থানে যাওয়ার জন্য গোসল করা।
- মীনা বাজারে কুরবানী করার পূর্বে গোসল করা।
- ছাফা-মারওয়া পাহাদয়ে সা'ঈ বা দৌড়াবার পূর্বে গোসল করা।
- মক্কা শরীফের প্রবেশ করার পূর্বে গোসল করা।
- চন্দ্র ও সূর্য্য গ্রহণের সময় গোসল করা।
- ইস্তেস্কার নামায আদায়ের জন্য গোসল করা।
- ভয়ে অত্যন্ত আতংকিত অবসস্থায় পড়ে গোসল করা।
- ঝড়-তুফান বা ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হলে গোসল করা।
- নবী কারীম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মদীনা শরীফে প্রবেশের পূর্বে গোসল করা।
- নতুন কাপড় পরিধান করার পূর্বে গোসল করা।
- মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার পর গোসলদাতার গোসল করা।
- দূর হতে ভ্রমনের পর বাড়ীতে ফিরে এসে গোসল করা।
ইসলামিক কথা সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url